আসন্ন বিজিএমইএ নির্বাচনে তৎপর জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যা মামলার আসামীরা

জনতার আওয়াজ ডেস্কবাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) এর আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গণহত্যায় জড়িত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সহযোগীরা দিনদিন সক্রিয় হয়ে উঠেছে। আসন্ন এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নিজেদের অবস্থান পাকাপোক্ত করার লক্ষ্যে বেশ দৌড়ঝাপ শুরু করেছে তারা। যাদের প্রত্যেকেই জুলাই আন্দোলনের গণহত্যায় সহায়তাকারী হিসেবে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় এজাহার ভুক্ত আসামি।এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের দুর্নীতিবাজ সাবেক এমপি আব্দুস সালাম মুর্শেদীর কন্যা স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকারের অন্যতম ঘনিষ্ঠজন। মিরপুর-আশুলিয়ায় জুলাই আন্দোলনের এজহারভুক্ত আসামি শেহরিন সালাম ঐশী, উত্তরা-মিরপুর থানার এজাহারভুক্ত আসামি বিজিএমই এর বিতর্কিত সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল, ও বিজিএমইএর সাবেক সহ সভাপতি মিরান আলীসহ অনেকেই। জুলাই-আগস্ট গণ-আন্দোলন ঠেকাতে এবং গণহত্যায় সহায়তার পাশাপাশি অর্থ যোগানদাতা হিসেবে এই তিনজন সহ বিজিএমইএর অনেক ব্যবসায়ী এমপির নাম উঠেছে। বর্তমানেও এই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সিন্ডিকেট মিলে শেখ হাসিনার পক্ষে সরকার বিরোধী গোপন ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।সূত্র জানায়, মিরপুর মডেল থানায় শেহরিন সালাম ঐশী, মহিউদ্দিন রুবেলসহ অনেকেই বিগত জুলাই আন্দোলন ঠেকাতে অর্থ যোগানদাতা ও গুলি করে ছাত্র জনতাকে হত্যাচেষ্টার মামলা এজহারভুক্ত আসামি। তাদের আরেক সহযোগী বিজিএমইএ’র নেতা মিরান আলীসহ বেশ কয়েকজন এজহারভুক্ত হত্যা মামলার আসামী। মামলা হওয়ার পর থেকে মিরান আলী পালিয়ে বেড়ান। বর্তমানে তিনি লন্ডনে অবস্থান করছেন বলে জানিয়েছে সূত্র। মিরান আলী বিটপি গ্রুপ ও মিসামী গার্মেন্টস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। মিরান আলী বিটপি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা রেজা আলীর পুত্র।গণহত্যাকারী শেখ হাসিনার অন্যতম ঘনিষ্ঠ দোসর সাবেক বাণিজ্য উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে রেজা আলীর ঘনিষ্ঠ সখ্যতা ছিল। এই সখ্যতাকে কাজে লাগিয়ে তারা আইটি ও টেলিকম সেক্টর এবং বঙ্গবন্ধু জন্মশতবার্ষিকীর বহু কাজ বাগিয়ে নিয়ে শত শত কোটি টাকা আয় করেছেন।নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, বিগত ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পক্ষে প্রতিশোধ নিতে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত বিজিএমই-এর সাবেক পলাতক সভাপতি মান্নান কচি প্যানেলের বেশ কিছু পরিচালক। আসন্ন বিজিএমই নির্বাচনে গণহত্যায় সহায়তাকারী পলাতক এই ব্যবসায়ী নেতাদের গোপনীয় মিশন রয়েছে। মিশন বাস্তবায়নে বিদেশে পালিয়ে থাকা আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে তাদের গোপন যোগাযোগ রয়েছে। আসন্ন বিজিএমই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সক্রিয় হতে বিতর্কিত শেহরিন সালাম ঐশী, মহিউদ্দিন রুবেল ও মিরান আলী প্রকাশ্যে বেশ দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে। বিজিএমইএ নির্বাচনকে সামনে রেখে আবারও ভোটার তালিকা নিয়ে উঠেছে জোর বিতর্ক। রাজধানীর বাইরে অবস্থিত ফ্যাক্টরি মালিক রুবেল ঢাকার ভোটার তালিকায় নাম থাকা নিয়ে বেশ অসন্তোষ বিরাজ করছে সংগঠনটিতে।সূত্র জানায়, মহিউদ্দিন রুবেল ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেড এর পরিচালক। এই ফ্যাক্টরি চট্রগ্রামে অবস্থান করলেও তিনি বরাবরই নিজের নাম রেখেছেন ঢাকার ভোটার তালিকায়। দীর্ঘ ৮ বছর ধরে এই বিতর্কিত ভোটার তালিকায় তিনি নিজের নাম রেখেছেন রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে। এত বছর মেয়র আতিকের ভাগিনা হিসেবে পরিচয় দিয়ে মহিউদ্দিন রুবেল ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রভাবশালী দোসরদের ক্ষমতার ব্যবহার করেছেন।সরেজমিনে খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, মিরপুর ও আশুলিয়ায় জুলাই আগস্টে শ্রমিক বিক্ষোভ ঠেকাতে একাধিক শ্রমিকলীগের নেতাদের নিয়ে আওয়ামী এজেন্ডা বাস্তবায়নে তৎপর ছিলেন শেহরিন সালাম ঐশী, মহিউদ্দিন রুবেল ও মিরান আলী। সরকারি পট পরিবর্তন এর পর পোশাক খাতের শ্রমিক উস্কানিদাতাদের মধ্যেও অন্যতম এই তিন ব্যবসায়ী।সংশ্লিষ্ট সকলের দাবি আসন্ন বিজিএমই এর নির্বাচনে আবারও যাতে বিতর্কিত সাবেক পরিচালক ও গণহত্যার দোসরদের অবস্থান না থাকে তার ব্যবস্থা করার।শেহরিন সালাম ঐশী ও মহিউদ্দিন রুবেলের মুঠফোনে ফোন করা হলে তারা রিসিভ করেননি পরবর্তীতে ক্ষুদেবার্তা পাঠানো হলেও কোন সাড়া দেননি। এছাড়া মিরাণ আলী বিদেশে পালিয়ে থাকায় তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *